স্টাফ রিপোর্টার, ঢাকা অফিস : দেশে গণতন্ত্র, সামাজিক মর্যাদা ও সাম্য প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন-সংগ্রামের কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। 

তিনি বলেছেন, এবার আর ছলচাতুরি করে ক্ষমতাসীনদের শেষ রক্ষা হবে না। জনসম্পৃক্ত তীব্র আন্দোলনে তাদের বিদায় নিতে হবে। 

আজ বুধবার (২৩ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ২০ দলীয় জোট শরিক জাগপার উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন নজরুল। ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ বৃহত্তর দিনাজপুরে জাগপার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রয়াত শফিউল আলম প্রধান কর্তৃক স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলন দিবস স্মরণে এ আলোচনা সভা হয়। 

দিবসটি প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম খান বলেন, মরহুম শফিউল আলম প্রধান সেদিন পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দিনাজপুরে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। অথচ তখনও পাকিস্তান বাহিনী সক্রিয়। কিন্তু আমরা সে দিনটিকে মনে রাখিনি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন সামনে রেখে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটকে সক্রিয় করার আহ্বান জানান জোট শরিক ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ। তিনি বলেন, ২০ দলীয় জোট পরীক্ষিত জোট, সময়ের পরীক্ষায় এই জোট উত্তীর্ণ। কেননা, মন্ত্রী-এমপিত্বসহ নানা সুযোগ-সুবিধার অফার থাকা সত্ত্বেও বিএনপিকে বাদ দিয়ে ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত দশম সংসদ নির্বাচনে ২০ দলীয় জোটের কোনো দলই অংশ নেয়নি। অথচ আজকে দীর্ঘদিন ধরে এই জোট নিষ্ক্রিয়, কোনো বৈঠক হয় না। জোটের ব্যানারে কোনো কর্মসূচিও হয় না। 

বিএনপির বৃহত্তর ঐক্য গঠনের প্রসঙ্গ টেনে এনপিপির চেয়ারম্যান বলেন, বাম-ডানসহ যারা যারা আসতে চায় সবাইকে নিয়ে ঐক্য গড়ে তুলুন। ২০ দলের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু ২০ দলীয় জোটকে সক্রিয় করুন। ২০ দলীয় জোট কিংবা জোটের শরিক কোনো দলকে নিয়ে কোনো টেকনিক্যাল অসুবিধা থাকলে দ্রুততম সময়ে তা সমাধান করে পরীক্ষিত এই জোটকে গতিশীল-সক্রিয় করুন। 

অনুষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে নিষ্ক্রিয় থাকায় ২০ দলীয় জোটকে নিয়ে অবস্থান পরিষ্কার করতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানান জোট শরিক ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) চেয়ারম্যান ক্বারী আবু তাহের। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ১৪ দলীয় জোটকে যথেষ্ট সম্মান-মর্যাদা দেয় আওয়ামী লীগ। বিপরীত দিকে ২০ দলীয় জোট অবহেলিত। বিএনপি জোটের নিবন্ধিত দলগুলোকে গুরুত্ব দিলেও অনিবন্ধিত দলগুলোকে মূল্যায়ন করে না। অথচ নিবন্ধিত-অনিবন্ধিত সবাইকে নিয়েই ২০ দলীয় জোট। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও জোট নেতাদের সাথে যোগাযোগ করেন না। জোটের নেতারাও তার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন না। দ্রুততম সময়ে ২০ দলীয় জোটকে সক্রিয় করার আহ্বান জানান তিনি।

জাগপার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন-জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, এনপিপির মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা প্রমুখ। 

বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমান বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। নির্বাচন হতে হবে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। আন্দোলনে এই দাবি আদায় করতে হবে।