জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি: জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার ইটাখোলা-নিশ্চিন্তা বাজার সড়কের মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের নামে ইটের খোয়া বিছিয়ে দীর্ঘদিন থেকে ফেলে রাখায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে এলাকাবাসি। আচ্ছন্ন ধুলায় সড়কে প্রায় দূর্ঘনা ঘটছে ও রাস্তার পাশের এলাকার শিশু ও বৃদ্ধরা শ্বাসকষ্টে ভুগছে। শুষ্ক আবহাওয়ায় প্রচন্ড ধুলার কারণে যানবাহন সহ পথচারি চলাচলে চরম বিঘ্ন ঘটছে। প্রতিদিন ওই পথে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে শতশত ভারী ও হাল্কা যানবাহন। ঘটছে নানা দুর্ঘটনা।
জেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, দরপত্রের মাধ্যমে ক্ষেতলালের ইটাখোলা থেকে নিশ্চিন্তা সড়কের দুই দশমিক ২০ কিলোমিটার অংশ মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের দায়িত্ব পায় জয়পুরহাট সবুজনগরের মেসার্স এমআর এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যার চুক্তি মূল্য ১ কোটি ৬৪ লাখ ৮৪ হাজার ৬৩২ টাকা। গত বছরের ২৪ নভেম্বর কাজটির কার্যাদেশ দেওয়া হয়। চুক্তি অনুযায়ী কাজটি সম্পন্ন করার সর্ব শেষ সময় সীমা বেধে দেওয়া হয় আগামী ১ এপ্রিল । দরপত্রের মাধ্যমে কাজটি এমআর এন্টারপ্রাইজ পেলেও বগুড়ার ঠিকাদার রমজান আলী কাজটি কিনে নিয়ে যথারীতি সড়কটির মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের ৬০ ভাগেরও বেশি কাজ শেষ করেন। চুক্তি অনুযায়ী সড়কটির উল্লেখিত অংশে আগের পিচ ও পাথর তুলে নতুন ইটের খোয়া ও বালু ঢেলে রোলার দিয়ে দেবে দেন। এরপর গত প্রায় এক মাস থেকে সড়কটি ওই অবস্থায় ফেলে রেখে ঠিকাদার সম্পূর্ণ কাজ বন্ধ রাখেন। ফলে সড়কটিতে ভারী ও হাল্কা যানবাহন সহ পথচারী চলাচল করতে গিয়ে চরম বিড়ম্বনায় পড়ছে। যানবাহন চলাচলের সময় ধুলায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে পুরো এলাকা। এতে সড়ক সংলগ্ন বাড়ি-ঘরগুলো ধুলার আস্তরনে ঢেকে যাচ্ছে। স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও শিশুরা চলাচল করতে পারছে না ওই সড়ক পথে।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারী উত্তর ভাবকি গ্রামের মলি আকতার নামের এক স্কুল শিক্ষার্থী ওই সড়ক পথে স্কুলে আসার সময় ট্রাকের সাথে ধাক্কা লেগে গুরুতর আহত হয়। সড়ক পাড় হওয়ার সময় প্রচন্ড ধুলার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে। জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটিতে অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল করায় ধুলার কারণে সাইকেল, ভ্যান, অটোরিক্সা অথবা হেঁটে যাতায়াত করা খুবই কষ্ট হয়ে পড়েছে।
কাজ বন্ধ রাখা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মোবাইল ফোনে ঠিকাদার রমজান আলী বলেন, 'দুই মাস আগে সড়কটির কাজ শেষ করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু জেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আলাউদ্দিন হোসেন সময়মত কাজের বিল না দেওয়ায় কাজটি সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। তখন সবকিছুর দামও কম ছিল। এখন পাথর ও বিটুমিনের দাম অনেক বেশি। এ অবস্থায় কাজটি সম্পন্ন করতে গেলে অনেক টাকা লোকসান হবে। কাজেই পাথর ও বিটুমিনের দাম না কমে আসা পর্যন্ত সড়কটির কার্পেটিং এর কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব নয়’।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আলাউদ্দিন হোসেন বলেন, 'সড়কটির সংস্কার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। শুধু কার্পেটিং বাঁকি। এজন্য ঠিকাদারকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। এমনকি সময়মত কাজ না করলে সিকিউরিটির ৮ লক্ষাধিক টাকা বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়াও শুরু করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে কাজ সম্পন্ন না হলে চুক্তি বাতিল করা হবে’।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, নিউজ টিপিবি এর দায়ভার নেবে না।