মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর মান্দায় ব্যক্তি মালিকানার একটি গভীর নলকুপের অপারেটরের বিরুদ্ধে অধিক হারে সেচভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। কৃষকদের অভিযোগ, উপজেলা সেচ কমিটির বেঁধে দেওয়া ভাড়া আদায়ের নির্দেশনা মানছেন না অপারেটর। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগে উপজেলা বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলী ও ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী এক কৃষক।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের শালদহ মধ্যপাড়া গ্রামে 'ক্ষেতমজুর সমবায় সমিতি লিমিটেড' নামে একটি সংগঠন বোরো ধানের জমিতে সেচকাজের জন্য গভীর নলকুপ স্থাপন করে। এ সমিতির সভাপতি, ক্যাশিয়ার ও অপারেটরের নেতৃত্বে এটি পরিচালনা করা হয়। চলতি মৌসুমে একবিঘা জমিতে সেচের জন্য কৃষকদের নিকট থেকে আদয় করা হচ্ছে ৩৫০০ টাকা করে। এর প্রতিবাদ করেও কোনো প্রতিকার পাননি কৃষকেরা।
উপজেলা বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, উপজেলা সেচ কমিটির সিদ্ধান্তক্রমে চলতি মৌসুমে এ দপ্তরের অধীনে গভীর নলকুপে অঞ্চল ভেদে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। ব্যক্তি মালিকানার ক্ষেত্রে প্রতি বিঘায় সর্বোচ্চ ১৫০০ টাকা ভাড়া আদায় করা যাবে। কোনোভাবেই এর অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করার সুযোগ নেই।
শালদহ গ্রামের কৃষক রবিন্দ্রনাথ প্রামানিক বলেন, ওই গভীর নলকুপ থেকে পানি নিয়ে এবারে সাড়ে ৭ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছি। প্রতি বিঘার জন্য ভাড়া গুনতে হয়েছে সাড়ে ৩ হাজার টাকা। একটুও কম দিতে পারিনি। প্রতিবাদ করেও লাভ হয়নি বলে জানান তিনি। একই ধরণের অভিযোগ করেন শালদহ গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক, আমিনুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম, কার্তিক চন্দ্র হালদারসহ আরও অনেকে।
অভিযোগকারী কৃষক বিমান চন্দ্র প্রামানিক বলেন, গভীর নলকুপের সভাপতি কামাল হোসেন ওরফে কামরুলের নেতৃত্বে কৃষকের কাছ থেকে গলাকাটা ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এছাড়া অন্তত ৬০ বিঘা খাস জমি দখলে নিয়ে চাষাবাদ ও ভোগদখল করেছেন সমিতির সদস্যরা।
তিনি আরও বলেন, কোনো কৃষক এসবের প্রতিবাদ করলে তাদের জমিতে পানি সেচ দেওয়া হয় না। তাই প্রতিকার পেতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু বাক্কার সিদ্দিক ও বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেনের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে।
শালদহ ক্ষেতমজুর সমবায় সমিতির সভাপতি কামাল হোসেন কামরুল বলেন, গভীর নলকুপে বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে প্রায় ৪ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এজন্য প্রতি বিঘায় ৩৫০০ টাকা করে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
উপজেলা বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলী ও উপজেলা সেচ কমিটির সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থলে একটি তদন্ত টিম পাঠানো হবে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু বাক্কার সিদ্দিক বলেন, সেচ কমিটির সিদ্ধান্তের বাইরে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কোনো সুযোগ নেই। এ ধরণের ঘটনা ঘটে থাকলে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, নিউজ টিপিবি এর দায়ভার নেবে না।