বেড়া (পাবনা) প্রতিনিধি: পাবনার বেড়ায় ইমরান হোসেন (২১) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। হত্যার সঙ্গে জড়িত আজাদুর রহমান নবীন (২৪) ও আলাউদ্দিন (২০) নামের দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে বেড়া থানার পুলিশ। তারা গত মঙ্গলবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। নবীন পৌর এলাকার সান্যালপাড়া মহল্লার আব্দুল মাজেদ ও আলাউদ্দিন আব্দুল মালেকের ছেলে। ভাই হত্যার বদলা নিতেই ইমরাণকে তারা খুন করেছেন বলে আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিতে তারা জানিয়েছেন। এ জন্য নিহত ইমরানের সাথে নবীন মহিলা কণ্ঠে প্রায় তিন মাস ধরে প্রেমিকার অভিনয় করে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন।
বেড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অরবিন্দ সরকার জানান, গত সোমবার সকালে পৌর এলাকার আলহেরানগর মহল্লার একটি ঘাসের ক্ষেত থেকে শিশু অপহরণ ও হত্যা মামলার আসামি ইমরান হোসেনের ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে বেড়া থানা পুলিশ। তার পকেটে থাকা মোবাইলের কললিস্টের সূত্র ধরে প্রথমে নিশ্চিত হন তিনি করমজা গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে। আব্দুল কুদ্দুস ওই দিন অজ্ঞাত আসামি করে বেড়া মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। বেড়া মডেল থানা মামলাটিকে অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে ওই দিন বেড়া ও নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় অভিযান চালিয়ে সান্যালপাড়া মহল্লার আজাদুর রহমান নবীনকে গ্রেফতার করে। পরে নবীনের দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তার সহযোগী আলাউদ্দিকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের মঙ্গলবার আদালতে উপস্থিত করা হলে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আদালত তাদের স্বীকারোক্তি লিপিবদ্ধ করে হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণ করে তাদেরকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
বেড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অরবিন্দ সরকার বলেন, একটি হত্যার বদলা নিতে গিয়ে ঘটে গেছে আরেকটি হত্যাকাণ্ড। হত্যাকাণ্ডের পর আমরা সর্বোচ্চ মেধা ও আন্তরিকতা দিয়ে খুনিদের শনাক্ত করা চেষ্টা করেছি। এতে দ্রুত সময়ের মধ্যেই আমরা হত্যাকারীদের গ্রেফতার করেছি। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীও দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, নিহত ইমরান হোসেন ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে আরাফাত (৮) নামের এক শিশুকে অপহরণ ও হত্যার অভিযোগে সাড়ে পাঁচ বছর যশোরের কিশোর সংশোধনাগারে কারাভোগ করে আট থেকে নয় মাস আগে জেল থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। জেল থেকে মুক্তি পেয়ে সে নবীনকে দম্ভোক্তি নিয়ে বলেছিল 'কি? করতে পারলি'। এতে নবীনের মধ্যে ভাই হত্যার বদলা নেয়ার প্রতিশোধস্পৃহা জেগে ওঠে। নিহত ইমরান পরিবারসহ সান্যালপাড়া মহল্লায় বাস করলেও আরাফাত হত্যাকাণ্ডের পর তারা ওই এলাকা ত্যাগ করে সাঁথিয়া উপজেলার করমজা গ্রামে বসবাস করছিলেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, নিউজ টিপিবি এর দায়ভার নেবে না।