ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আনন্দপুরের ফর্টিস হাসপাতালে ‘পরিদর্শন টিম’ পাঠাচ্ছে রাজ্যের স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন। ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত বিল করার চারটি অভিযোগ এসেছিল আগেই। পঞ্চম অভিযোগ নিয়ে কমিশনের দ্বারস্থ হন ইমাম হুসেন।
বিহারের বাসিন্দা ইমামের স্ত্রী নবীজান বিবি একাধিক জটিলতা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন আনন্দপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতালে। ৬৯ বছর বয়সের প্রৌঢ়া গত ২৮ জানুয়ারি ভর্তি হন। ১০ মার্চ পর্যন্ত ছিলেন হাসপাতালে। এরপর পরিবারের লোক মুচলেখা দিয়ে ডিসচার্জ করিয়ে তাকে বাড়ি নিয়ে যান। সমস্যা হয় বিল দিতে গিয়েই। নবীজান বিবির চিকিৎসাবাবদ বিল হয়েছে ২৪ লাখ ১৫ হাজার টাকা! তার মধ্যে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা দিয়েছেন তিনি। বকেয়া ১৮ লাখ ৬৫ হাজার টাকা।
ইমাম হুসেনের বক্তব্য, বকেয়া টাকা দেব। তবে যেন ন্যায্য হয়।
বিল খতিয়ে দেখেছে রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন। কমিশন চেয়ারম্যান প্রাক্তন বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বিভিন্ন খাতে অসম্ভব বেশি বিল। হাসপাতাল কোনোরকম অ্যাডভাইসরি মানেনি। বাজারের থেকে অতিরিক্ত দামে মেরোপেনেম, হিউম্যাল অ্যালবুমিন দেওয়া হয়েছে।
কমিশনের রায় অনুযায়ী, বকেয়া ১৬ লাখ টাকা কিস্তিতে দিতে পারবে রোগীর পরিবার। চারমাস পর থেকে মাসে ২ লাখ টাকা করে দেবেন।
কমিশন চেয়ারম্যানের কথায়, এর আগেও চারটি ক্ষেত্রে সতর্ক করা হয়েছিল। আনন্দপুরের ওই হাসপাতাল কেন অ্যাডভাইসরি মানছে না, তা দেখতে হাসপাতালে যাবে ইন্সপেকশন টিম। গত এক মাসের সমস্ত বিল অডিট করবে সেই টিম। প্রশাসনিকভাবে খতিয়ে দেখা হবে বিলগুলো।
উল্লেখ্য, জনগণকে আর্থিক নিরাপত্তা দিতে ২০২০ সালে অ্যাডভাইসরি জারি করেছিল রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন। যেখানে বলা হয়েছিল, ওষুধে অন্তত ১০ শতাংশ এবং চিকিৎসার অন্যান্য সরঞ্জামে ২০ শতাংশ ছাড় দিতে হবে। দামি ব্র্যান্ডের অ্যান্টিবায়োটিক, ওষুধ ব্যবহারের আগে রোগীর পরিজনদের মতামত নিতে হবে। একই ওষুধ কম দামেও পাওয়া যায়। রোগীর পরিজন সেই ওষুধ ব্যবহার করতে চান কি-না তা জানতে হবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, নিউজ টিপিবি এর দায়ভার নেবে না।