মূল্যবৃদ্ধির আগুনে জ্বলছে শ্রীলঙ্কা। খাদ্য ঘাটতি আর অর্থনৈতিক দুর্দশার কবলে পড়েছে দেশটি। সংকট শুরু হওয়ার পর ব্যাপক বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে শ্রীলঙ্কার সরকার এরই মধ্যে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছে। তবে এমন পরিস্থিতির মধ্যে ৪০ হাজার টন ডিজেল নিয়ে একটি জাহাজ দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে পৌঁছেছে। বিকেলে দেশব্যাপী এ তেল সরবরাহ করা হবে।
ঋণ শোধ করতে গিয়ে তলানিতে ঠেকেছে শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। রিজার্ভ না থাকায় জ্বালানি তেল, গুঁড়া দুধের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি ব্যয় মেটাতে পারছে না শ্রীলঙ্কা সরকার। পরিস্থিতি এমন যে, পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের হাতে কাগজ দিতে না পারায় পরীক্ষা স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে দেশটির শিক্ষা বিভাগ।
১৯৪৮ সাল অর্থাৎ স্বাধীনতার পর থেকে এমন চরম আর্থিক সংকটের মুখে পড়তে হয়নি শ্রীলঙ্কাকে। দেশজুড়ে চলছে চরম হাহাকার। অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন অনেকে। দেশের রিজার্ভে অর্থ নেই বললেই চলে। সব মিলিয়ে তীব্র হাহাকার ও অরাজকতা চলছে শ্রীলঙ্কায়। ডলার সংকটের কারণে পণ্য আমদানি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। অন্যদিকে তেলের অভাবে দেশজুড়ে নেমে এসেছে অন্ধকার।
জানা গেছে, শ্রীলঙ্কার বাস ও বাণিজ্যিক যানবাহনের জন্য ডিজেল অন্যতম জ্বালানি। তবে স্টেশনগুলোতে প্রয়োজনীয় জ্বালানি না থাকায় ভেঙে পড়েছে পরিবহনব্যবস্থা।
এদিকে তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়া শ্রীলঙ্কায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দমাতে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে। শুক্রবার (১ এপ্রিল) মধ্যরাতে দেশব্যাপী জরুরি অবস্থা জারির এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
সমস্যা সমাধানের জন্য এবং বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকা শ্রীলঙ্কা আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। এদিকে ভারতের কাছেও ঋণসহায়তা চেয়েছে দেশটি। গত এক দশকে চীনের কাছ থেকে ৫০০ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হওয়ার ফলে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ঋণ পুনর্গঠনের অনুরোধও জানিয়েছেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, নিউজ টিপিবি এর দায়ভার নেবে না।